জেলার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন পর্না দাস দত্ত।
তার শারীরিক গঠন, আত্মবিশ্বাস আর অবিশ্বাস্য লড়াইয়ের গল্প আজ বহু মানুষের অনুপ্রেরণা।
নিতান্তই এক সাধারণ গৃহবধূ—সংস্কৃত নিয়ে এমএ, বিএড পাশ করার পর সংসার ও সন্তানের দায়িত্বই ছিল তার প্রধান পরিচয়।
কিন্তু সেই সাধারণ জীবনের মাঝেই এক অসাধারণ অধ্যায় শুরু হয় ২০১৫ সালে। শারীরিক সমস্যার কারণে ফিটনেস বজায় রাখতে জিমে যোগ দিলেও, সেই জিমই হয়ে ওঠে তার জীবনের মোড় ঘোরানো পথ। শুরু হয় নতুন এক যাত্রা—যা তাকে আজ অন্য উচ্চতায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
শরীরচর্চার প্রতি পর্নার আগ্রহ প্রথমে অভ্যাস, পরে ধীরে ধীরে নেশায় পরিণত হয়। নিয়মিত পরিশ্রম, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অনড় অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ তিনি আজ শুধু সুস্থই নন—তিন-তিনবার বেঙ্গল পাওয়ারলিফটিং গোল্ড মেডেল জয়ী এক গর্বিত মহিলা বডি বিল্ডার।
বর্তমানে তিনি হাবড়ার ‘ফিট ফিউশন’ জিমে ট্রেনার হিসেবে কর্মরত। তরুণ-তরুণীদের সঠিক ডায়েট, শরীরচর্চা ও লাইফস্টাইলের দিশা দেখিয়ে গড়ে তুলছেন নতুন প্রজন্মের ফিটনেস-সংস্কৃতি।
সবচেয়ে বিস্ময়কর অংশ—অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও থামেননি পর্না।
গর্ভাবস্থার ৮ মাস পর্যন্ত নিয়মিত জিমে গিয়েছেন তিনি। সন্তান জন্মের মাত্র ২১ দিন পরেই ফের জিমে ফেরা—তার একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস ও ইচ্ছাশক্তির এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল পর্না। শাড়ি পরে শরীরচর্চা, অনবদ্য ফিজিক আর আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি—সব মিলিয়ে জেলার ক্রীড়ামহলে তিনি এখন আলোচনার অন্যতম মুখ। রাস্তার পোস্টার, ফিটনেস ক্যাম্প—সব জায়গায় উঠে আসছে তার প্রতিচ্ছবি।
তার প্রশিক্ষণে অনুপ্রাণিত হয়ে বহু শিক্ষা নবিস আজ সুস্থ জীবনযাত্রার পথে এগিয়ে আসছেন।
এই ভাবেই পর্না দাস দত্ত প্রমাণ করেছেন—আধুনিক নারী মানেই শক্তি, অধ্যবসায় আর স্বপ্নপূরণের অদম্য ইচ্ছাশক্তি।













