দান নয়, মানবতার পথপ্রদীপ — অশোক সেনের হাতে স্বনির্ভরতার নতুন দিগন্ত সাজিবুলের
“জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর”—এই চিরন্তন বাণীকেই জীবনের পথনির্দেশক করে ছাতনার সমাজসেবী ও শিল্পপতি অশোক সেন আবারও প্রমাণ করলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তাঁর জীবনের মূল ব্রত।
ছাতনার মসজিদগড়া এলাকার বিশেষভাবে সক্ষম যুবক সাজিবুল খান—যার জীবন এক সময় অন্ধকারে ঢেকে গিয়েছিল। স্বপ্ন ছিল ছোট্ট একটা নিজের ব্যবসা, কিন্তু সামর্থ্য ছিল না। ঠিক সেই সময় মানবতার হাত বাড়িয়ে দিলেন অশোক সেন।
কেবল সাহায্য নয়—সাজিবুলের জন্য পুরো একটি দোকান তৈরি করে দিলেন তিনি, দোকানের সাজসজ্জা, সামগ্রী, উদ্বোধন—সবই তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
প্রায় তিন দশক আগে কর্মসূত্রে দিল্লি পাড়ি দেওয়া ছাতনার ছেলে অশোক সেন আজ শিল্পপতি। তবু সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেও নিজের জন্মভূমিকে ভোলেননি একদিনও। দীর্ঘ কর্মজীবনের পর ছাতনায় ফিরে এসে মানুষের জন্য কাজ করাটাই হয়ে ওঠে তাঁর একমাত্র সাধনা।
কখনো বাড়িতে বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া, কখনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার, কখনো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো—এভাবেই বারবার প্রমাণ করেছেন, মানবতা শব্দটি তাঁর কাছে নিছক কথামালা নয়, এক বাস্তব জীবনদর্শন।
বিনিময়ে চান না কিছুই—মানুষের মুখের হাসিই তাঁর সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
নিজের দোকান পেয়ে চোখে জল নিয়ে সাজিবুলের কথায়—
“আমি কোনোদিন ভাবিনি নিজের দোকান হবে। অশোক দাদার জন্য আজ নিজেকে স্বনির্ভর মনে হচ্ছে।”
অশোক সেনের এই মানবিক উদ্যোগে ইতিমধ্যেই উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাঁকুড়াজুড়ে। সমাজের বিভিন্ন সংগঠন, সাধারণ মানুষ সবাই তাঁর এই কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ জানিয়ে বলছেন—
“তিনি শুধু সহায়তা করেন না, মানুষকে স্বনির্ভর হওয়ার শক্তি দেন। সমাজে মানবতার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার এ যেন এক অনন্য উদাহরণ।”













