হাবড়ার অসহায় পূর্ণিমার পাশে হরিমোহন ঘোষ — বাবাহারা মেয়ের কান্না সমাজকে নাড়া দিল
হাবড়ার জিয়াউলডায়ার সেই ছোট্ট বাড়িটার ভেতরে আজ যেন শোকের কালো ছায়া।
মাত্র কুড়ি বছরের তরুণী পূর্ণিমা দাস—গোবরডাঙ্গা হিন্দু কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী—আজও বিশ্বাস করতে পারছে না, তার বাবা আর কোনওদিন ফিরবেন না।
ছ’দিন আগে হঠাৎই বাবার মৃত্যুর পর যেন সবকিছু থমকে যায়। সংসারের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনিই। তাঁর চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন পৃথিবীটাই ভেঙে পড়ে পূর্ণিমার ওপর।
বাড়িতে নেই কোনও রোজগার, নেই ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা। বাবার শেষক্রিয়া করার মতো সামর্থ্য পর্যন্ত নেই—এ যেন এক অসহায়তার দুঃস্বপ্ন।
স্থানীয়দের মুখে পূর্ণিমার এই দুঃখের কথা শুনে চুপ থাকতে পারেননি হাবড়ার সমাজসেবী হরিমোহন ঘোষ। সব কাজ ফেলে ছুটে যান পূর্ণিমার বাড়িতে। দরজা খুলতেই চোখে পড়ে অশ্রুভেজা মুখ, নীরব বেদনা, আর অনিশ্চয়তার পাহাড়।
পূর্ণিমার কাঁধে সান্ত্বনার হাত রেখে হরিমোহনবাবু বলেন—
“বাবাকে হারিয়েছো ঠিকই, কিন্তু তোমার লড়াই থামবে না। পড়াশোনা বন্ধ করবে না। তোমার সব দায়িত্ব আমি নেব।”
শুধু কথায় নয়—জামাকাপড়, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, এমনকি পরবর্তী ক্রিয়াকর্ম সম্পন্ন করার জন্য আর্থিক সাহায্যও পৌঁছে দেন তিনি। পরে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেও দেওয়া হয় সহায়তার হাত।
এ যেন শুধুই সাহায্য নয়—এক অসহায় মেয়ের বেঁচে থাকার শেষ ভরসা।
হরিমোহন ঘোষের আন্তরিক আবেদন—
“একটা পরিবার আজ ভেঙে পড়েছে। আপনারা যদি একটু করে পাশে দাঁড়ান—তবে এই মেয়েটির জীবনটাকে আবার নতুন করে আলো দেখানো যাবে।”
পূর্ণিমার চোখে এখনও কান্না, কিন্তু সেই কান্নার আড়ালে আজ ক্ষীণ এক আশার আলোও জ্বলছে।
সমাজ যদি পাশে থাকে—তবে বাবাহারা পূর্ণিমা আবারও দাঁড়াতে পারবে, বাঁচতে শিখবে।













