২৪টি আঙুল! জন্মের অদ্ভুত আশ্চর্য, আর জীবনের নির্মম বাস্তব—বিশ্বজিৎ মণ্ডলের গল্প আজ ভাইরাল হওয়ার মতোই
২৪টি আঙুল—সংখ্যাটা যেন কোনও কল্পকাহিনি থেকে উঠে আসা!
কিন্তু এই সংখ্যাটাই বাস্তব, সত্যি, আর নিঃসন্দেহে অবাক করা—কারণ এই বিরল শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মেছেন বাঁকুড়ার জামডহরার এক সাধারণ যুবক, বিশ্বজিৎ মণ্ডল।
শিশুকাল থেকেই তিনি ছিলেন গ্রামের “চমক”।
নবজাতকের হাত-পা দেখে কেউ বলত—“এ তো ঈশ্বরের আশীর্বাদ!”
আবার কেউ অবিশ্বাসে একাধিকবার গুনে দেখত—সত্যিই কি ২৪টা?
কিন্তু মানুষ যত বড় হয়েছে, পৃথিবী তত তার জন্য ছোট হয়ে এসেছে।
জন্মের সেই ‘অলৌকিক’ বৈশিষ্ট্য বড় হতে হতে পরিণত হয়েছে নিঃশব্দ যন্ত্রণায়।
তবু থেমে যাননি বিশ্বজিৎ।
মাধ্যমিক পর্যন্ত লড়াই করে পড়াশোনা করেছেন—একসময় ভেবেছিলেন, অন্যদের মতো তিনিও এগোবেন নিজের পথে।
ঠিক তখনই জীবনের মোড় ঘুরে যায় এক ভয়ানক দুর্ঘটনায়।
ভেঙে যায় বাঁ হাত, হয়ে পড়ে প্রায় অচল।
শরীরের বোঝা বাড়ে, আর স্বপ্নগুলো এক এক করে ছোট হতে থাকে।
এখন তাঁর বেঁচে থাকার প্রধান ভরসা হওয়ার কথা ছিল প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট।
কিন্তু এটিই যেন তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন যুদ্ধ!
অফিস থেকে অফিসে ছুটে ক্লান্ত বিশ্বজিৎ—ফাইল ওঠে, আবার নামেও না…
কাগজপত্র ঘুরে বেড়ায় টেবিলের ওপর, কিন্তু তাঁর অধিকার যেন বাতাসে ঝুলে থাকে।
হিড়বাঁধ ব্লকের জামডহরা গ্রামের ছোট্ট কুঁড়েঘরে আজও তিনি অপেক্ষা করছেন…
কোনও অলৌকিক ঘটনার নয়,
শুধু একটুকরো স্বীকৃতির,
যা তাঁর জীবনটাকে একটু হলেও সহজ করে দেবে।
২৪টি আঙুল নিয়ে জন্মানো মানুষটিকে দেখে মানুষ আজও অবাক হয়—
কিন্তু তাঁর জীবনের লড়াই, তাঁর নিঃশব্দ কষ্ট কেউ দেখে না।
এই মানুষটির গল্পটা শুধুই এক বিরল বৈশিষ্ট্যের গল্প নয়—
এটা মানবিকতার অপক্ষার গল্প,
এক সত্যিকারের ফাইটারের গল্প,
যা একবার পড়লে ভুলে থাকা যায় না।













